সভ্য অসভ্য.....

সে অনেকদিন আগের কথা। সালটা ১৯৭২ হলেও মাস মনে নেই। সে যাক, বিশেষ এক কারনে তখন দিন কাটাচ্ছি নাগাল্যান্ডের রাজধানী শহর কোহিমাতে। পাহাড়ের গায়ে ধাপে ধাপে তৈরি এসবেস্টসের ছাদওয়ালা ছোট ছোট কাঠের বাড়ি। যাতায়াতের জন্য পাকদন্ডী পথ। শহরে চলে সমান্তরাল প্রশাসন, দিনের বেলায় রাজ্য সরকারের আর রাতে নাগা জঙ্গীদের। ভীষণ জরুরী না হলে সচরাচর কেউ রাতে বাড়ি থেকে বেরোয় না। বহিরাগতরা তো নয়ই!

একদিন বিকেলে আমরা কজন তাস খেলতে গেছি দুধাপ ওপরে এক বঙ্গসন্তানের সরকারি কোয়ার্টারে। ভদ্রলোক ওখানকার PWD তে চাকরি করেন। খেলার ঝোঁকে কখন যে রাত আটটা বেজে গেছে খেয়াল করিনি। এখন ফিরবো কি করে..?
উপায় বের করলেন গৃহস্বামীর স্ত্রী। ভদ্রলোককে বললেন, ওনাদের কিশোরী কন্যাকে সাথে নিয়ে আমাদের ছেড়ে আসতে। রাতবিরেতে নাগা জঙ্গীরা পথে মহিলা দেখলে অসভ্যতা তো করেই না, উল্টে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সেরাতে ওই দশ মিনিটের পাহাড়ী রাস্তা পেরিয়ে নিরাপদেই ফিরে আসতে পেরেছিলাম।

চলুন এবার সুদূর আফগানিস্তান। ওখানে দীর্ঘদিন কাটানো আমার এক পরিচিত জনের অভিজ্ঞতার কথা বলি। নারী স্বাধীনতা বলে একদম কিছু নেই। কিন্তু রাস্তায় মহিলারা যদি হিজাবে মুখ ঢেকে পুরুষ সঙ্গী সহ বেরোয়, তাহলে মাঝরাতেও সে নিরাপদ!

এবার আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন স্থানে কালীপুজোর সময় মহিলাদের অবস্থা দেখুন। স্বামী অথবা বাড়ির লোকজন সঙ্গে থাকলেও রাস্তায় ঘটলো নিগ্রহ। প্রতিবাদীদের কপালে জুটলো বেদম মার। যতোই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনকে সান্তনা দিন না কেন ব্যাপারটা কিন্তু আর হেলাফেলার মধ্যে রইলো না! যাদের অসভ্য বলে থাকি, সত্যিই কি তারা তাই, নাকি....?

কলমে  স্বপন সেন 
ছবি: কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি, কোহিমা

( Swapan Sen-জানার কোন শেষ নাই ফেসবুক গ্রুপ থেকে সংগৃহীত ) 

Join our Facebook group

👉 👉 [এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টগুলো ফেসবুক এবং ইমেইল থেকে সংগৃহীত। উক্ত লেখার বক্তব্য ও দায়-দায়িত্ব লেখকের একান্ত নিজস্ব। তাই প্রকাশিত লেখার বিষয়ে কোনো মতামতের জন্য এডমিন দায়ী নয়।]