• সাম্প্রতিক

    মৃত্যুর পরেও তিনি জায়গা পাননি কলকাতার কোনও কবরখানায়।

    তিনি যখন শেষ শয্যায় শায়িত‚ পাশের টেবিলে খোলা পড়ে আছে প্রবন্ধ ‘নারীর অধিকার‘। লেখা শেষ করেছিলেন আগের রাতেই। শেষ দিকে দিনে ষোল ঘণ্টার পরিশ্রমে ভেঙে পড়েছিল শরীর। কত কাজ বাকি রেখে চলে যেতে হল এত তাড়াতাড়ি।

    সিঙ্গাপুরে জগদ্বিখ্যাত আইরিশ ব্যান্ড U2, তাদের অনুষ্ঠান চলাকালীন বিভিন্ন দেশের দুনিয়া বদলে দেওয়া কিংবদন্তী নারীদের সম্মান জানায়। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার গর্ব এক মহিলা। বাংলার নারীদের শৃঙ্খলমুক্তির পুরোধা বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন। তাঁকে ‘বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত’ বলা হয়।

    তবে জানেন কি তৎকালীন ধর্মীয় সমাজের বাধায় বেগম রোকেয়াকে কলকাতার কোনো কবরখানায় সমাহিত করা সম্ভব হয়নি। কি ছিল তাঁর অপরাধ ? অপরাধ গুরুতর। ধর্মীয় অনুশাসনের বেড়াজালকে ছিন্ন করে তিনি নারীকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন।তিনি বলতেন "কারাগারে বন্দীগণ প্রায় লৌহ নির্মিত বেড়ী পরে, আমরা স্বর্ণ-রৌপ্যর বেড়ী অর্থাৎ মল পরি। উহাদের হাতকড়ি লৌহ নির্মিত, আমাদের হাতকড়ি স্বর্ণ বা রৌপ্য নির্মিত চুড়ি।" শিক্ষার মাধ্যমে নারীসমাজকে আধুনিক প্রগতিশীল করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। আর সেই কারণেই মৃত্যুর পরেও ঠাঁই পাননি কলকাতার কোনো কবরখানায়।
    তাহলে কোথায় সমাধিত করা হয়েছিল তাঁকে ?

    সোদপুর পানিহাটিতে অন্তিম শয়ানে ঘুমিয়ে আছেন বেগম রোকেয়া। অনেক দিন পর্যন্ত বেগম রোকেয়ার কবরের খোঁজই তেমন কেউ জানত না। পরে ঐতিহাসিক অমলেন্দুবাবু কলকাতার উপকণ্ঠে সোদপুর পানিহাটিতে এই মহীয়সী নারীর কবরটি খুঁজে বের করেন।

    তার কবরটি শ্বেতপাথর দিয়ে বাঁধানো। তার ওপর লেখা- স্ত্রী শিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে এখানে সমাহিত করা হয়েছিল।

    জানা যায়, তৎকালীন কলকাতার ধর্মীয় সমাজের বাধায় লোকচক্ষুর আড়ালে কোনও এক আবদুর রহমানের দেওয়া জমিতে পানিহাটিতে গঙ্গার ধারে সমাহিত করা হয় রোকেয়াকে। তবে আবদুর রহমান কে ছিলেন, তা নিশ্চিত করে জানা যায় না। কেউ কেউ মনে করেন তিনি রোকেয়ার পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ ছিলেন। তাই তিনি রোকেয়াকে সমাহিত করার জমি দিয়েছিলেন।

    মৃত্যুর কিছুদিন আগে বেগম রোকেয়া তার কোন ছাত্রীকে বলেছিলেন ‘কবরে শুইয়া শুইয়াও যেন আমি মেয়েদের কলকোলাহল শুনতে পাই’। সেই ইচ্ছা পূর্ণ হয় রোকেয়ার প্রয়াণের প্রায় এক দশক পরে। ঠিক রোকেয়ার সমাধিস্থলের পাশে, ওই স্থানেই গড়ে উঠেছে ‘পানিহাটি বালিকা বিদ্যালয়’ নামে মেয়েদের একটি স্কুল।

    '১৯৩২ বিদায় হঠাৎ
    কাঁদছিল দিন, কাঁদছিল রাত
    বাঙালি কি সেদিন কেঁদেছেন?
    বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন...'
    ওনারও জন্ম এবং মৃত্যুদিন একই তারিখে। আজকের দিনে। ডিসেম্বর ৯ ।
    প্রণাম

    তথ্য : দেশ রূপান্তর,

    World Vision ( বিশ্ব দর্শন) ফেসবুক গ্রুপ থেকে সংগৃহীত ) 





    👉 👉 [এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টগুলো ফেসবুক এবং ইমেইল থেকে সংগৃহীত। উক্ত লেখার বক্তব্য ও দায়-দায়িত্ব লেখকের একান্ত নিজস্ব। তাই প্রকাশিত লেখার বিষয়ে কোনো মতামতের জন্য এডমিন দায়ী নয়।]

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728

    আমরা আপনাকে বিনামূল্যে আমাদের আপডেট গুলি পাঠাতে যাচ্ছি। প্রথমে আপনার অনুলিপি সংগ্রহ করতে, আমাদের মেইলিং তালিকায় যোগ দিন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, অকেজো তথ্য প্রেরণ করে আপনাকে বিরক্ত করবো না। সুতরাং কোনও আপডেট মিস করবেন না, সংযুক্ত থাকুন!